সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬



 ঘুরে আসুন 'নিঝুম দ্বীপ' থেকে





নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশের দক্ষিণে পর্যটন কেন্দ্র নোয়াখালী হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ। শুধু সৌন্দর্য্যেই নয় প্রাকৃতিক সম্পদেও রয়েছে বিশাল সম্ভাবনা।

বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে জেগে ওঠা দ্বীপটির একদিকে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গ, অন্যদিকে ছুটে আসা হিমেল হাওয়া আর সবুজের সুবিশাল ক্যানভাস দ্বীপটিকে দিয়েছে ভিন্ন এক রূপ বৈচিত্র্য যেন চিত্রশিল্পী সুনিপুণভাবে গড়েছেন জল রং তুলিতে।

যেভাবে শুরু এবং নামকরণ:
১৯৫০ সালের দিকে প্রায় ১৪,০৫০ একর এলাকা জুড়ে জেগে ওঠে দ্বীপটি। ওসমান নামের এক লোক প্রথম এই দ্বীপে বসতি স্থাপন করে। এই কারণেই সম্ভবত দ্বীপটিকে স্থানীয়রা 'ওসমানের চর' নামে ডাকে।

নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অর্ন্তগত নিঝুম দ্বীপ। একে 'দ্বীপ' বলা হলেও এটি মূলত একটি 'চর' প্রায় ৬৩ বর্গমাইল আয়তনের দ্বীপটি হাতিয়ার মূল ভূখন্ড থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।

দ্বীপটির চিত্র:
১৯৭০ সালের দিকে নিঝুম দ্বীপে স্থায়ীভাবে মানুষ বসবাস শুরু করে। যদিও ১৯৯৬ সালে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কথা মাথায় রেখে একে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

শুধু বাংলাদেশ নয়, বহির্বিশ্বের মানুষেরও এই দ্বীপটি নিয়ে আছে সীমাহীন কৌতুহল। যেমন কৌতুহল দ্বীপটির নাম নিয়ে তেমনি এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ, মানুষের জীবনযাত্রা আর সর্বোপরি হরিণের অভয়ারণ্য হিসেবে ইতোমধ্যেই বিশ্বমানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে দ্বীপটি।

যেভাবে যাবেন নিঝুমদ্বীপে:

নদীপথে:
-
ঢাকা থেকে নিঝুম দ্বীপ যাওয়ার সহজ রুটটি হলো- সদরঘাট থেকে লঞ্চে হাতিয়ার তমরুদ্দি। পথে দুটি লঞ্চ নিয়মিত চলাচল করে। এমভি পানামা এবং এমভি টিপু-৫।

-
তমরুদ্দি থেকে স্কুটারে বন্দরটিলা ঘাট যেতে হবে। একসাথে / জন যাওয়া যাবে। স্কুটার ছাড়া বাস বা রিকসা করে বন্দরটিলা ঘাটে যাওয়া যায়।

-
বন্দরটলা ঘাট থেকে ট্রলারে চ্যানেল পার হলেই নিজুম দ্বীপের বন্দরটিলা। চ্যানেল পার হতে সময় লাগবে ১৫ মিনিট। এটা নিঝুম দ্বীপের এক প্রান্ত, আসল গন্তব্য অন্য প্রান্তের নামা বাজার। বন্দরটিলা থেকে নামা বাজার যেতে হবে রিকশায়।

সড়ক পথে:
-
বাস ট্রেন ব্যবহার করে যেতে পারেন সেখানে। ঢাকার টিটি পাড়া, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি থেকে প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত অনেকগুলো চেয়ারকোচ (একুশে এক্সপ্রেস, এশিয়া ক্লাসিক, বিআরটিসি) সরাসরি নোয়াখালীতে যাতায়াত করে।

-
বিকেল :২০মি. কমলাপুর থেকে ছাড়ে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন। এছাড়া ঢাকা সায়েদাবাদ থেকে আধা ঘন্টা পর পর যাত্রীসেবা বাস গুলো ছাড়ে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে।

-
নোয়াখালী সোনাপুর পৌঁছে সেখান থেকে যেতে হবে নোবিপ্রবি রোড় হয়ে অথবা চর জব্বার রোড়ে চেয়ারম্যান ঘাট। বাস, টেম্পু বা বেবীতে সরাসরি ৬০ কিঃমিঃ দক্ষিণে সুধারামের শেষ প্রান্তে চর মজিদ স্টিমার ঘাট হয়ে হাতিয়া যাবার চেয়ারম্যান ঘাট।

-
চর মজিদ ঘাট থেকে ট্রলার কিংবা সী-ট্রাকে করে হাতিয়া চ্যানেল পার হয়ে যেতে হবে হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে।

-
নলচিরা বাজার থেকে যেতে হবে হাতিয়ার দক্ষিণে জাহাজমারা।
-
জাহাজমারা থেকে ট্রলারে সরাসরি নিঝুম দ্বীপ।

যেখানে থাকবেন:
নিঝুম দ্বীপে থাকার জন্য একমাত্র ভালো মানের জায়গা হলো অবকাশ পর্যটনের নিঝুম রিসোর্ট। তবে স্থানীয় বাজারে খুব সস্তায় অল্প দামে চার পাঁচটি আবাসিক বোডিং আছে।

-
তাছাড়া বন বিভাগের একটি চমৎকার বাংলো আছে। পাশেই আছে জেলা প্রশাসকের ডাক বাংলো। এগুলোতে আগে ভাগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে থাকার ব্যবস্থা করা যায়। তাছাড়া রেড-ক্রিসেন্ট ইউনিট সাইক্লোন সেন্টারেও থাকার ব্যবস্থা করা যায়

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Blogger Templates