সোমবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৭

নীল জলের অপূর্ব লালাখাল ভ্রমণের এখনই সময়

নীল জলের অপূর্ব লালাখাল ভ্রমণের এখনই সময়
..


..লালাখালের এই রূপ দেখতে পাবেন শীতকালেই।
 শীতকাল ঘুরে বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত সময়। শীত শীত আবহাওয়ায় মানুষ ক্লান্ত হয় কম। প্রকৃতিও থাকে শান্ত। তাই পাহাড়ে, বনে-জঙ্গলে বা সমুদ্রে হারিয়ে যেতে চাইলে বন্ধুরা মিলে বেরিয়ে পড়ুন এখুনি। কোথায় যাবেন? সিলেটের অপূর্ব নদী লালাখাল হতে পারে আপনার এবারের গন্তব্য।


লালাখালের রূপ আর শীতকাল যেন একে অপরের পরিপূরক। দেখা হলেই বদলে যায় মনের রঙ। সেই রঙ ধরা পড়ে লালাখালের জলে। অসাধারণ নীল রঙ ধারণ করে নদীটি এই ঋতুতে। স্থির স্বচ্ছ নীল জলের উপর নৌকায় ভাসতে ভাসতে পাহাড় দেখার আনন্দই অন্যরকম। সিলেট মানেই নদী আর পাহাড়ের মিতালী। দূরের ঝর্ণা থেকে বয়ে আসা নদীর স্বচ্ছ জল আর তাতে আকাশের প্রতিবিম্ব সিলেটকে করেছে ছবির মত সুন্দর।.
...



সিলেট মানেই নদী আর পাহাড়ের মিতালী। 
নদী হওয়ার পরও নাম কেন খাল সে প্রশ্ন আছে সবার মনেই। কিন্তু স্থানীয়দের কাছে এর কোন উত্তর মেলে নি। অপূর্ব নীল জলের কারণে এর নাম হতে পারত নীলাখাল।  কিন্তু সেটিও ঘটে নি। নামের রহস্য রহস্যই রয়ে গেছে আর যুগে যুগে নামেই ভ্রমণপিপাসু মানুষদের আকর্ষণ করে চলেছে নদীটি। 

নদীর যেখানে শুরু সেখানেই রয়েছে বিশাল চা বাগান। দুই পাড়ে তেমন কোন বাড়িঘর নেই। আছে নানান রকমের গাছপালা। নদীর বাঁকে বাঁকে ছড়িয়ে আছে সৌন্দর্য্য। শরতে এখানে দেখা মেলে কাশফুলের। দূরের পাহাড়ের নিলাভ সবুজ রঙ আর পাহাড়ে আটকে যাওয়া মেঘ, নীল লালাখাল সব মিলিয়ে যেন এক অপার্থিব সৌন্দর্য

শীতকালীন ভ্রমণে বোনাস হিসেবে পাবেন শীতের পাখির দেখা। পূর্নিমায় নদীর তীরকে বেছে নিতে পারেন ক্যাম্পিং করার জন্য। তবে পূর্নিমায় যেতে না পারলেও হতাশ হবার কিছু নেই, আকাশ কুয়াশামুক্ত থাকলে অমাবস্যায় দেখতে পাবেন অগুণতি তারার মেলা। 

.......
স্মরণীয় হয়ে থাকবে লালাখালে নৌকা ভ্রমণ। 
লালাখালে যেতে হবে নৌকা বা স্পীডবোটে। সারিঘাট থেকে বেছে নিতে হবে আপনার পছন্দের বাহন। তবে নৌকায় ভ্রমণটাই বেশি উপভোগ্য। তাড়াহুড়ো করে না বেড়িয়ে অন্তত একটি দিন সময় নিয়ে ঘুরে বেড়ান। আশেপাশের এলাকায় আদিবাসীদের জীবনযাপন দেখতে ভালো লাগবে আপনার। লালাখালে সূর্যাস্তের রূপও অতুলনীয়।

কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে যাবেন সিলেট। সিলেটে শিশু পার্ক থেকে লেগুনা বা জাফলং এর বাসে চড়ে সিলেট-তামাবিল সড়ক ধরে যাবেন সারিঘাট। সারিঘাট থেকে নৌকা বা স্পীডবোটে বেড়িয়ে আসুন লালাখাল। তবে যদি বন্ধুরা মিলে দল বেঁধে আসেন তাহলে সিলেট থেকে মাইক্রোবাস বা গাড়ি ভাড়া করেও যেতে পারেন।

থাকার ব্যবস্থা
লালাখালে একমাত্র থাকার ব্যবস্থা রয়েছে নাজিমগড় রিসোর্টে। আগে থেকে রুম বুক করা ভাল। তবে আপনি যদি সিলেট শহরে অবস্থান করেন এবং একদিনের মাঝেই লালাখাল থেকে ফিরতে চান তাহলে রাত টার মধ্যে রওনা দেবেন। সিলেটে থাকার জন্য অসংখ্য হোটেল এবং রিসোর্ট রয়েছে।

খরচ
সিলেট শহর থেকে শুধু লালাখালের জন্য মাইক্রোবাসের ভাড়া ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে হবে, গাড়ি নিলে ভাড়া ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে। সারা দিনের প্ল্যান হলে ভোরে সিলেট থেকে রওনা দিতে হবে। তাছাড়া বাস কিংবা লেগুনায় ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে সারিঘাট যেতে পারবেন। সেখানে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা আর স্পিডবোটে যেতে চাইলে ভাড়া ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা হতে পারে। নৌযানে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে। 

প্রকৃতি মনকে শান্ত করে, উদার করে। তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকে যখনই সময় পান ঘুরে আসুন। প্রকৃতিকে ভালোবাসুন। প্লাস্টিক জাতীয় কিছু বা কোন আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলা থেকে বিরত থাকুন। দেশ আমাদের, একে সুন্দর রাখার দায়িত্ব আমাদেরই


0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Blogger Templates