মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৬

স্মার্ট প্রেজেন্টেশনের জন্য ১১ কিলার টিপসঃ

প্রেজেন্টেশনের সাথে আমরা সবাই পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে কর্পোরেট জব পর্যন্ত প্রেজেন্টেশন বড় হওয়ার পথে অনেক বড় ভুমিকা রাখে। আপনি যদি নিজেকে ভালোভাবে উপস্থাপন না করতে পারেন তাহলে আপনি পিছিয়ে যাবেন অনেক দূরে। যে কারণে আপনাকে কর্মক্ষেত্রে থেকে শুরু করে ভালো জীবন ব্যবস্থা লিড দিতে প্রেজেন্টেশন বড় ভুমিকা আছে।



প্রেজেন্টেশনে আপনিই বস
অনেকে প্রেজেন্টেশনকে শুধুমাত্র নিজের কাজের বাইরে কিছু মনে করেন না। কিন্তু এটা খুবই ভুল ধারণা। আপনি জীবনের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে বাস্তবিক উন্নতির জন্য স্মার্টটি নিজেকে উপস্থাপনের প্রয়োজন আছে। যদি আপনি নিজেকে ভালোভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হন, তাহলে আপনি অনেক কিছু হারাবেন। যেকারনে আপনাকে একজন ভালো প্রেজেন্টার হতে হবে। আমি বেশ কয়েকটি প্রেজেন্টেশনের কিলার টিপস সংগ্রহ করেছি। আপনাদের উপকার হবে আশা করি। তাহলে দেরি না করে দেখে নিন স্মার্ট প্রেজেন্টেশনের কিছু কিলার টিপস।

স্মার্ট প্রেজেন্টেশনের জন্য ১১ কিলার টিপসঃ

১) আপনার লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে আসবেন নাঃ

যদি আপনি পাওয়ার পয়েন্ট বা পোস্টার বা অন্য কোন মাধ্যমে প্রেজেন্টেশন দেন না কেন, সবসময় চেষ্টা করুন সেগুলোকে খুব বেশি সিম্পল রাখার। কখনো খুব বেশি ওয়ার্ড লিখে অডিয়েন্সের বিরক্ত করবেন না। কারণ শ্রোতারা আপনার কথা শুনতে আসছে, স্লাইড দেখার জন্য নয়। সেহেতু এই বিষয়টা কখনো লক্ষ্যভ্রষ্ট হবেন না।

প্রেজেন্টেশনের টপিকস সব সময় ঠিক রাখবেন

২) অডিয়েন্সের দিকে সবসময় দৃষ্টি দিনঃ

আপনি যদি আমাকে বলেন প্রেজেন্টেশনের সময় কোন দিকে তাকাবো, তাহলে আমি অবশ্যই বলবো অডিয়েন্সের দিকে। সবসময় চেষ্টা করবেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে। অডিয়েন্সের সাথে আই কন্টাক্ট করুন। শুধু কয়েক জনের সাথে আই কন্টাক্ট না করে পূরা হল রুমে সবার সাথে আই কন্টাক্ট করার চেষ্টা করুন। আমি যদি এটা না করতে পারেন তাহলে অডিয়েন্স অন্য মনোস্ক হয়ে যাবে। সেহেতু অডিয়েন্সকে সবসময় নিজের দিকে আকর্ষিত করে রাখুন।

প্রেজেন্টেশনে অডিয়েন্স আপনার মেইন ফোকাস

৩) আপনার ব্যক্তিত্ব ফুটায়ে তুলুনঃ

আপনি কর্পোরেট বা অন্য কোথাও প্রেজেন্টেশন করতে পারেন, কিন্তু আপনাকে সব সময় স্পেসাল পারসোনালিটি ফুটাতেই হবে। আপনি যদি এক্সশেপশনালি অডিয়েন্সের কাছে যেতে চান তাহলে এই গুন আপনাকে আয়ত্ত করতেই হবে। আপনি বিশেষ কিছু এক্সপ্রেশন দিতেই হবে। না হলে আপনি গতানুগতিক বক্তা হয়ে যাবেন। আপনাকে এক সময় ভিন্নতাহিন মনে করবে শ্রোতারা।

প্রেজেন্টেশনে ব্যক্তিত্ব একটা বড় অংশ

৪) অডিয়েন্সকে হাসানঃ

আপনার প্রেজেন্টেশনের মূল অর্থ হয়তো কাউকে শেখানো, তবে এই শেখানোর কাজ আপনি আরও ভালোভাবে করতে পারবেন যদি আপনি তাদেরকে হাসাতে পারেন। আপনি যতো ভালো বক্তা দেখবেন সবাই এই গুনের অধিকারী ছিল। যদি আপনি অডিয়েন্সকে হাসাতে পারেন তাহলে আপনি তাদেরকে শেখাতেও পারবেন। আপনি দেখবেন যদি আপনি এই গুন আয়ত্ত করতে পারেন তাহলে হয়তো আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাদেরকে দিয়ে যাবেন আর অডিয়েন্স নিতেই থাকবে।

অডিয়েন্সকে কাছে টানতে আপনাকে ভিন্ন কিছু পদ্ধতি নিতেই হবে

৫) অডিয়েন্সের সাথে একাত্ম হতে কিছু শেয়ারিং করুনঃ

অডিয়েন্স যদি কথা বলতে থাকে তাহলে আপনার প্রেজেন্টেশন নষ্ট হবে। তবে তাদেরকে আপনি ছোট ছোট কোচ্চেন করে আগ্রহী করে রাখতে পারেন। এমন কোন পরিবেশে যাবেন যেটা তাদেরকে বিরক্ত করে। অডিয়েন্স আপনার কাছে কিছু জানতে চাইলে, তা খুব ভালো ভাবে ছোট করে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন।

অডিয়েন্স যেন ঘুমিয়ে না পড়ে!! :D

৬) কথা বলায় সৎ থাকুনঃ

মিথ্যা কথা বলে অডিয়েন্সকে সন্তুষ্ট করার কোন মানে নেই। সব সময় চেষ্টা করুন সত্য কথা বলতে। কেউ তাতে অসন্তুষ্ট হলেও আপনার ব্যক্তিত্ব কোথাও কমে যাবে না, বরং আপনাকে মানুষ ভালবাসতে শুরু করবে।

৭) অভার প্রিপারেশন ভালো নাঃ

আপনি প্রেজেন্টেশন করবেন ভেবে অতিরিক্ত রিসার্চ করার দরকার নাই। রিসার্চ করলেও সেটা অডিয়েন্সের সামনে খুব কম উপস্থাপন করুন। না হলে উপস্থাপন রোবটিক হয়ে যাবে। আর রোবটিক প্রেজেন্টেশন কখনো আকর্ষণীয় হয় না। তবে এমন কিছু রিসার্চ করুন যা আপনাকে ব্যতিক্রম করে তুলবে। কিছু স্পেশাল তথ্য পাবে।

প্রিপারেশন নিতে নিতে আপনি নিজেকেই ভুলে বসবেন না

৮) রোবটটিক ভাবে থাকবেন নাঃ

অনেকে আছেন যারা কথা বলার সময় স্ট্রেট দাঁড়িয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে অডিয়েন্স বিরক্ত হবে। আপনাকে মুভমেন্ট রাখতে হবে কথা বলার সাথে সাথে। মুভমেন্ট না থাকলে আপনার এক্সপ্রেশন ভালোভাবে ফুটায়ে উঠাতে পারবেন না। অনেক সময় আপনি এটাতে অভ্যস্ত হতে সময় লাগবে। তবে সব সময় চেষ্টা করবেন মুভমেন্টগুলো সবসময় কথার সাথে সাথে করার। এটাকে আপনাকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।

না হলে অনেকে এভাবেই ঘুমাবে

৯) অহেতুক শব্দ পরিহার করুনঃ

বক্তা সবসময় শুদ্ধ ভাষায় কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। অনেক সময় কিছু অস্বাভাবিক ওয়ার্ড মুখ দিয়ে বের হতে পারে। যেমন উহু, আঃ এজাতীয়। সব সময় খেয়াল রাখবেন একবার অসতর্ক ভাবে হয়ে গেলেও পরবর্তীতে যেন বারবার পুনঃরাবৃত্তি না হয়। এগুলো অডিয়েন্স খারাপভাবে নিতে পারে।

১০) ডিফ্রেন্ট করে উপস্থাপন করুনঃ

নিজেকে সবসময় একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করুন। খুব বেশি ভিন্নতাও ভালো না। তবে এমন কিছু ইউনিক জিনিস আপনি দিবেন যা অন্যরা দিতে পারবে না। আপনি যদি এক্সশেপশানাল কিছু তথ্য দিতে পারেন তবে দর্শক আপনাকে এক্সশেপনালি মনে রাখবে। যেটা আপনাকে ব্র্যান্ড করতে সুযোগ তৈরি করে দিবে।

ডিফ্রেন্ট করে উপস্থাপন করুন

১১) এক্সট্রা টিপসঃ ভয় দূর করুনঃ

প্রেজেন্টেশনে অনেক সময় অনেকে ভয় পান বা নিজেকে ছোট ভাবেন। কিন্তু এটা প্রথম প্রথম একটু হলেও ধীরে ধীরে ঠিকই হয়ে যাবে। প্রয়োজনে বাসায় বসে নিজে নিজে কথা বলুন বা রেকর্ড করে নিজেই ভুল ধরতে শুরু করুন। এভাবে করলে হয়তো আপনি এক্সশেপশনাল কিছু বের করে ফেলতে পারবেন। আরেকটা কথা যখন কথা বলবেন, মনে রাখবেন সবাই আপনার কাছে শুনতে আসছে, সেহেতু এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নাই।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by Free WordPress Themes | Bloggerized by Lasantha - Premium Blogger Themes | Blogger Templates